তানোরে ক্রয়কৃত জমির উপর বসবাসরত এক দরিদ্র পরিবারের ঘর-বাড়ি ভাংচুর করে সেখানে কলাগাছ লাগিয়ে জায়গা দখলে নিয়েছে প্রভাবশালীরা। এ ঘটনায় রাজশাহী জেলা বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-৬ এ একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। মামলার বিবরন ও প্রত্যক্ষদর্শি এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, তানোর পৌর এলাকায় জে-এল নং ২২৯, রায়তান বড়শো মৌজায় আর এস ক্ষতিয়ান নং ১৩৫, আরএস দাগ নং ৯৮৯, রকম বাড়ি, ১৬শতকের কাত ৬শতক জমি রায়তান বড়শো গ্রামের মৃত আবির আলীর পুত্র মৃত আবেদ আলীর কাছ থেকে গত ২৩/০১/১৯৮৬ ইং তারিখে ৪৫০নং দলিলে রায়তান বড়শো গ্রামের মৃত নাদের আলীর পুত্র মৃত জাবেদ আলী ক্রয় করে সেখানে মাটির ঘর-বাড়ি নির্মান করে বসবাস করে আসছিলেন। সেখানে বসবাস করা অবস্থায় মৃত জাবেদ আলী তার পুত্র আনারুল ইসলামের কাছে গত ১৯/০৯/২০০৭ইং তারিখে ৪০৩২নং দলিলে হস্তান্তর করেন। গত ১০/০৪/২০১৪ইং তারিখে ১৭৮০নং দলিলে মৃত জাবেদ আলীর পুত্র আনারুল ইসলাম তার স্ত্রী, পুত্র ও কন্যাকে হেবা ঘোষনায় রেজিষ্ট্রি করে দেন। ওই বাড়িতে আনারুল তার স্ত্রী নাদিরা বিবিসহ পরিবার নিয়ে বসবাস করা অবস্থায় ঘর-বাড়িতে তালা দিয়ে ঢাকায় গার্মেন্সের চাকুরীতে চলে যান। গত প্রায় ২মাস আগে আনারুল তার স্ত্রীসহ পরিবার নিয়ে ঢাকা থেকে এসে ওই বাড়িতে আবারো বসবাস শুরু করেন। আনারুল তার মা, স্ত্রী ও সন্তানসহ বসবাস করা অবস্থায় চলতি মাসের প্রথম সপ্তাহে সেখানে ইট দিয়ে ঘর ও বাড়ি নির্মান শুরু করেন। এ সময় একই গ্রামের খোদাবক্্র আলীর পুত্র আফসার আলী ও আতাউর রহমান ঘর-বাড়ি নির্মানে আনারুলকে বাধা প্রদান করেন। আফসার ও আতাউরের বাধা উপেক্ষা করে ঘর-বাড়ি নির্মান করা অবস্থায় আফসার আলী তানোর থানায় লিখিত অভিযোগ করেন। অভিযোগের প্রেক্ষিতে তানোর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন ঘর-বাড়ি নির্মান বন্ধ রাখতে বলে উভয় পক্ষকে কাগজপত্রসহ গত ২০/০৮/২০১৯ইং তারিখে থানায় আসতে বলেন। থানা পুলিশের ডাকে সাড়া না দিয়ে প্রভাবশালী আফসার ও আতাউর রহমান গত ১৮/০৮/২০১৯ইং তারিখে রাজশাহীসহ বিভিন্ন এলাকার ৫০/৬০জন লোক ভাড়া করে এসে দরিদ্র অসহায় আনারুল ইসলামের পূর্বের ঘর-বাড়িসহ নতুন ভাবে ইট দিয়ে নির্মানাধীন ঘর-বাড়ি ভাংচুর করেন এবং ইট, সিমেন্ট ও বালিসহ নির্মান সামগ্রীসহ টিন ও আসবাবপত্র জোর পূর্বক লুট করে নিয়ে যায় এবং ওই জায়গাটি পরিস্কার করে সেখানে গলাগাছ লাগিয়ে চারিদিক বেড়া দিয়ে ঘিরে জায়গাটি জবর দখলে নেন। ঘর-বাড়ি ভাংচুরের সময় বাধা দিতে গেলে ভাংচুরকারীরা আনারুল ও তার স্ত্রীসহ পরিবারের সদস্যদেরকে মারপিট করেন। এঘটনার ২দিন পর গত ২০/০৮/২০১৯ইং তারিখে রায়তান বড়শো গ্রামের মৃত জাবেদ আলীর পুত্র আনারুল ইসলামের স্ত্রী নাদিরা বিবি বাদি হয়ে একই গ্রামের খোদাবক্্র আলীর পুত্র আফসার আলীসহ ১২জনের নাম উল্লেখ করে রাজশাহী জেলা বিজ্ঞ জুডিশিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আমলী আদালত-৬ এ একটি মামলা দায়ের করেছেন। গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শি নারী-পুরুষ বলেন বিভিন্ন এলাকা থেকে লাঠিসোটাসহ লোক ভাড়া করে এনে অন্যায় ভাবে আফসার এই দরিদ্র পরিবারের বাড়ি-ঘর ভাংচুর করেছে। এ ব্যাপারে আনারুলের স্ত্রী নাদিরা বিবি বলেন, থানায় বসার আগেই প্রভাবশালী আফসার আলী বিভিন্ন এলাকার প্রায় ৫০/৬০জন লোক এনে আমাদের বসবাসরত ঘর-বাড়ি ভাংচুর ও ঘরে থাকা নগদ অর্থসহ প্রায় ২লাখ টাকার মালামাল লুট করে নিয়ে গেছে। তিনি বলেন গ্রামের লোকজন সকলেই বিষয়টি দেখেছেন কিন্তু তাদের লোকজন বেশী ছিলো তাই কেউ বাধা দিতে পারেনী। তিনি এঘটনার বিষয়ে প্রশাসনের উর্ধবতন কর্মকর্তাদের জরুরী হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে রায়তান বড়শো গ্রামের খোদাবক্্র আলীর পুত্র আফসার আলী বলেন, ওই জায়গাটি আমার পিতা খোদাবক্্রএর নামে রেকর্ডিয় সম্পত্তি, তাকে সেখানে বসবাস করতে দিয়েছিলাম, কিন্তু সেখানে ইট দিয়ে পাকা ঘর-বাড়ি নির্মান করছিলো তাই তার ঘর-বাড়ি ভাংচুর করে তুলে দিয়ে জায়গা দখলে নিয়েছি জানিয়ে তিনি সাংবাদিকদের এড়িয়ে যান। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তানোর থানার এসআই আনোয়ার হোসেন বলেন, অভিযোগের প্রেক্ষিতে বাড়ি নির্মান বন্ধ করে উভয় পক্ষকে থানায় ডেকে পাঠিয়েছিলাম, কিন্তু বাদি আফসার আলী থানায় না এসে র্নিধারিত সময়ের ২দিন আগে দরিদ্র পরিবারের ওই বাড়িটি ভাংচুর করে উচ্ছেদ করে জায়গা দখলে নিয়ে সেখানে কলাগাছ লাগিয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তিতে কোন পক্ষই আর থানায় আসেনি। থানায় আসলে আইনগত ব্যাবস্থা নেয়া হবে।