রাজ পরিবারের প্রথা ও ধর্মীয় আচার অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে দিনাজপুরে শ্রী শ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ নদীপথে পুলিশী প্রহরায় বুধবার সকালে কান্তনগর মন্দির থেকে যাত্রা করে। কান্তজীউ বিগ্রহ নিয়ে নৌবহর ২৫ কিলোমিটার নৌপথে ৩০ টি ঘাটে নৌকা ভিড়ানো হয়। পরে রাতে দিনাজপুর পৌচে। পরে নদীর ঘাট থেকে শোভা যাত্রা করে বিভিন্ন মন্দিরে পুজা-অর্চনা শেষে দিনাজপুরের রাজবাড়ী মন্দিরে নিয়ে যাওয়া হয়।
বুধবার ভোর হতে হাজার হাজার ভক্তদের পদচারণায় মুখরিত হয়ে উঠে কান্তজীউ মন্দির প্রাঙ্গনসহ বিভিন্ন নদীর ঘাট এলাকায়। বুধবার সকাল সাড়ে ৯টায় শ্রী শ্রী কান্তজীউ বিগ্রহ নৌপথে যাত্রার উদ্বোধন করেন সংসদ সদস্য ও হিন্দু কল্যাণ ট্রাষ্টের সহ-সভাপতি মনোরঞ্জন শীল গোপাল।
জানা যায়, ঐতিহ্যবাহী কান্তনগর মন্দির হতে পূজা অর্চনা শেষে নৌকার বহর নিয়ে কান্তজীউ বিগ্রহটি কান্তনগর ঘাট থেকে ঢেপা নদী পথে দিনাজপুরের সাধুর ঘাটের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হয়। নদীর দু’পাশে বিভিন্ন ঘাটে হাজার হাজার ভক্ত ও দর্শনার্থী ফল-ফলাদি নিয়ে অবস্থান নেয়। আগত হিন্দু পূর্ণ্যার্থীরা তাদের বাড়ীর বিভিন্ন ফল, দুধ ও অন্যান্য সরঞ্জামাদী কান্তজীউ বিগ্রহকে উৎসর্গ করে। এ সময় দিনাজপুর যাওয়ার পথে বিভিন্ন ঘাটে ঘাটে নদীর দু’কূল হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের ভীড়ে পরিপূর্ণ হয়ে উঠে।
কান্তনগর ঘাট থেকে দিনাজপুর শহরের সাধুর ঘাট পর্যন্ত ৩০টি ঘাটে কান্তজীউ বিগ্রহ বহনকারী নৌকা ভিড়ানো হয়। এ কারণে বিভিন্ন ঘাটসহ বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা করা হয়। বুধবার রাত ৮টায় কান্তজীউ বিগ্রহ সাধুঘাটে এসে পৌছালে দিনাজপুর রাজদেবোত্তর এষ্টেটের সভাপতি ও জেলা প্রশাসক জেলা প্রশাসক মাহমুদুল আলমসহ প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কান্তজিউ বিগ্রহ গ্রহন করেন। পরে বিগ্রহটি শহরের বিভিন্ন মন্দিরে পুজা-অর্চনা শেষে রাজবাড়ী মন্দিরে স্থাপন করা হয়।
যাত্রা উদ্বোধনকালে এমপি মনোরঞ্জন শীল গোপাল বলেন, রাজ পরিবারের রীতি অনুযায়ী কান্তজীউ বিগ্রহ ৯ মাস কান্তনগর মন্দিরে এবং ৩ মাস দিনাজপুরের শহরের রাজবাড়ীতে অবস্থান করেন। সেই প্রথা অনুযায়ী যুগযুগ ধরে এই নিয়ম চলে আসছে। এই তিনমাসে রাজবাড়ীতে প্রতিদিন প্রভাতী নামকীর্ত্তণ ও প্রতি বাংলা মাসের প্রথম শনিবার কমিটির পক্ষ থেকে ভোগের ব্যবস্থা করা হয়। এছাড়াও বিভিন্ন ভক্ত প্রতিদিন ভোগের ব্যবস্থা করে থাকেন। এ সময় বিশেষ প্রার্থনায় ডেঙ্গু জ¦রে আক্রান্তদের সুস্থতা এবং ডেঙ্গু থেকে মুক্তির জন্য মুক্ত এবং জাতির মঙ্গল কামনায় বিশেষ প্রার্থনা করা হয়।
উল্লেখ্য, প্রায় ৪শ' বছরের ঐতিহ্যবাহী এই পূজা প্রতিবছর আয়োজন করা হয় পুনর্ভবা নদীর কান্তনগর ঘাটে।