বিরামপুরে কাটলা দ্বি-মূখী উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষকের অবহেলায় দশম শ্রেণির এক শিক্ষার্থীর মৃত্যুর অভিযোগে দিনাজপুর জেলা প্রশাসক কর্তৃক গঠিত দুই সদস্যর তদন্ত কমিটি বিদ্যালয়ে ঘটনা তদন্ত করেছেন।
অপরদিকে স্কুলের শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে হাতে ব্যানার নিয়ে বিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সারিবদ্ধ ভাবে দাঁড়িয়ে বিভিন্ন শ্লোগানে শাস্তির দাবী জানাচ্ছিল। এ সময় নিহত ছাত্রের সহপাঠিরা দোষী শিক্ষকের বিচার চেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রী বরাবর স্মারকলিপি প্রদান করে। পরে, তদন্তকারী কর্মকর্তা দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আবু সালে মোঃ মাহফুজুল আলম শিক্ষার্থীদের ক্লাসে ফেরার আহ্বান জানান।
গতকাল মঙ্গলবার সকালে তদন্তকারী দুই কর্মকর্তা দিনাজপুর অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম ওই বিদ্যালয়ে ঘটনা তদন্তে আসেন।
এসময় শিক্ষার্থীরাও বিভিন্ন শ্লোগানে দোষী শিক্ষকদের শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত তারা ক্লাসে ফিরবেন না বলে ঘোষনা দেন।
জানা গেছে, ১৮ আগস্ট শিক্ষকের অবহেলায় ছাত্রের মৃত্যুর অভিযোগে ওই বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটি প্রধান শিক্ষকসহ ৬ শিক্ষককে সাময়িক বহিস্কার করেছে।
তবে, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. নজরুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, ওই ঘটনায় পরিচালনা কমিটি কর্তৃক শিক্ষক বহিস্কারের বিষয়ে আমি এখনও কোনো চিঠি পাইনি।
উল্লেখ্য, গত ৭ আগস্ট সকালে কাটলা দ্বি-মূখী উচ্চবিদ্যালয়ের ছাত্র আবদুল আজিম মন্ডল ক্লাসে হঠাৎ গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়ে। সহপাঠিরা আজিমকে মোটরসাইকেলে করে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেয়ার জন্য ওই বিদ্যালয়ের শিক্ষকদের নিকট সহযোগিতা চাইলে কোনো শিক্ষকই সহযোগিতা করতে রাজি হননি। পরে, সহপাঠিরা তাকে ভ্যানযোগে বিরামপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নিলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। আবদুল আজিম মন্ডলের মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে বিক্ষুদ্ধ শিক্ষার্থীরা ওইদিন দুপুরেই বিদ্যালয়ের ছয় শিক্ষকের ব্যবহৃত ৬টি মোটরসাইকেলে আগুন লাগিয়ে পুড়িয়ে দেয়।
এ ঘটনায় দিনাজপুর জেলা প্রশাসকের নির্দেশে গঠিত অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (শিক্ষা) আবু সালেহ মো. মাহফুজুল আলম ও জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা রফিকুল ইসলামের সমন্বয়ে গঠিত দুই সদস্যের তদন্ত কমিটি গতকাল মঙ্গলবার বিদ্যালয়ে উপস্থিত হয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের স্বাক্ষ্যগ্রহণ ও তদন্ত কাজ সম্পন্ন করেন।
এসময়, বিরামপুর উপজেলা চেয়ারম্যান খাইরুল ইসলাম রাজু, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মেজবাউল ইসলাম মেজবা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. মনিরুজ্জামান মনির, মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা নূর আলমসহ প্রমূখ উপস্থিত ছিলেন।