এবার বগুড়ায় বিসিএস ক্যাডারদের বিভিন্ন ব্যাচের ৬ মাসব্যাপী বুনিয়াদী প্রশিক্ষণে গিয়ে এক আনসার সদস্যকে মাদক দিয়ে ফাঁসানোর হুমকি দিয়েছেন বগুড়ায় কর্মরত এএসপি পর্যাদার এক পুলিশ অফিসার। শৃংখলা ভঙ্গের দায়ে প্রশিক্ষণ থেকে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
পল্লী উন্নয়ন একাডেমি (আরডিএ) বগুড়ার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আমিনুল ইসলাম বগুড়ার শিবগঞ্জ সার্কেলের এএসপি কুদরত-ই-খুদাকে এক বছরের জন্য বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।
তবে এ ব্যপারে এএসপি কুদরত-ই-খুদ ওরফে শুভ এঘটনাকে মিথ্যা দাবি করে বলেছেন, তার বাবা অসুস্থ তাই তিনি নিজে বুনিয়াদী প্রশিক্ষন থেকে স্ব ইচ্ছায় সরে এসছেন। কেউ তাকে বহিষ্কার করেনি।
এব্যপারে বগুড়া পল্লী উন্নয়ন আকাডেমি (আরডি)এর একটি নির্ভরযোগ্য সূত্র জানায়, গত মার্চে বিসিএস ক্যাডার বিভিন্ন ব্যাচের ৬ মাসব্যাপী বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ শুরু হয় বগুড়ায়। আগামি ২৭ সেপ্টেম্বর ওই প্রশিক্ষণের সমাপনী হওয়ার কথা। সেখানে অন্য কর্মকর্তাদের সঙ্গে বগুড়ার শিবগঞ্জ সার্কেলের এএসসি ৩৪তম বিসিএস ক্যাডার কুদরত-ই-খুদা শুভ অংশ নেন।
সূত্রটি আরো দাবী করে প্রশিক্ষণ চলাকালে তার বিরুদ্ধে শৃংখলা ভঙ্গের নানা অভিযোগ ওঠে। দেরিতে আসার ব্যাপারে প্রশ্ন করলে তিনি এক আনসার সদস্যকে গালিগালাজ, মাদক দিয়ে ধরিয়ে দেয়ার হুমকি দিয়ে ক্ষান্ত থাকেননি। তিনি তার প্রভাব ও ক্ষমতার জোর দেখিয়ে বিশেষ তদবিরের মাধ্যকে তাকে বদলি করান। অভিযোগে আরো জানা যায়, এরপর ওই আনসার সদস্যর বাড়ীতেও বাড়িতেও পুলিশ পাঠানো হয়। এছাড়াও তার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কর্মচারীদের সঙ্গে অসদাচরণের অভিযোগ ওঠে।
সূত্রটি আরও জানায়, এএসপি শুভর বিরুদ্ধে শৃংখলা ভঙ্গের ৫টি অভিযোগ ওঠায় শৃংখলা কমিটি ঈদের আগে তাকে এক বছরের জন্য প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কার করে।
আরডিএ বগুড়ার মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) আমিনুল ইসলাম এর সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, বুনিয়াদী প্রশিক্ষণে অংশ নেয়া এএসপি শুভর বিরুদ্ধে ৫টি সুনির্দিষ্ট শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগ আছে। ৩ সদস্যের শৃংখলা কমিটির সুপারিশে তাকে এক বছরের জন্য প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
তিনি বলেন, তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় শাস্তির ব্যবস্থা নেয়া যেত। তবে অন্য প্রশিক্ষণার্থীদের সতর্ক করতে তাকে গুরু অপরাধে লঘু শাস্তি দেয়া হয়েছে। তবে তিনি বাংলাদেশ লোক প্রশাসন প্রশিক্ষক কেন্দ্রে এ শাস্তির বিরুদ্ধে আপিল করতে পারবেন।
তিনি আরো জানান, এএসপি শুভর বিরুদ্ধে বগুড়া পুলিশ লাইন্সে আহম্মেদ সাব্বির নামে এক ব্যবসায়ীকে ধরে এনে বেধড়ক ভাবে পেটানোর অভিযোগও রয়েছে।
বিনা অপরাধে আহম্মেদ সাব্বির নামে এক সরবরাহকারীকে পুলিশ লাইন্সের অফিসার্স মেসে ডেকে নির্দয়ভাবে লাঠিপেটা করেন তিনি। এএসপি শুভর বিরুদ্ধে জেলা প্রশাসকের গাড়ির চালককেও মারপিটের অভিযোগ ওঠে।
বগুড়ার পুলিশ সুপার আলী আশরাফ ভুঞা বিপিএম (বার) সাংবাদিকদের জানান, এএসপি শুভকে বুনিয়াদী প্রশিক্ষণ থেকে বহিষ্কারের কথা তিনি শুনেছেন শুনেছেন। তবে তিনি বলেন,এটা প্রশিক্ষণ প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানের অভ্যন্তরীণ ব্যাপার। ব্যবসায়ী আহম্মেদ সাব্বিরকে মারপিটের ঘটনায় এএসপি শুভর বিরুদ্ধে কোনো শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে কী না এমন প্রশ্নের উত্তরে পুলিশ সুপার বলেন, তদন্ত কমিটির রিপোর্ট পুলিশ হেডকোয়ার্টারে পাঠানো হয়েছে।