ত্যাগের মহিমায় পবিত্র ঈদ-উল আযহা প্রিয়জনদের সাথে উদ্যাপন করতে ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে বাড়ি ফিরছেন বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ। নারীর টানে বাড়ি ফেরা এ অঞ্চলের মানুষের যাতায়াতের অন্যতম মাধ্যম হচ্ছে নৌরুটের বিলাস বহুল লঞ্চগুলো।
ঈদ যাত্রায় বিগত বছরে লঞ্চে আসা যাত্রীরা নগরী পার হতে নানান ধরণের হয়রানি ও ভোগান্তির শিকার হতেন। কিন্তু এ বছর আর যাত্রীদের হয়রানির শিকার হতে হচ্ছেনা। বরিশাল সিটি কর্পোরেশনের মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর মৌলিক চিন্তায় নিমিষেই দূর হয়েছে যাত্রী ভোগান্তি। শান্তিতে বাড়ি ফিরছেন ঘরমুখী মানুষ। তাও আবার বিনামূল্যের বাস সার্ভিসের মাধ্যমে। মেয়র সেরনিয়াবাত সাদিক আব্দুল্লাহর সৌজন্যে এবারই সর্বপ্রথম ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করা হয়েছে। শুধু ফ্রি বাস সার্ভিস চালু করেই দায়িত্ব শেষ করেননি মেয়র। সে সবের তদারকির জন্য নির্ঘুম রাত কাটিয়ে নৌ-বন্দর থেকে শুরু করে কেন্দ্রীয় বাস টার্নিমাল পর্যন্ত এলাকা মোটরসাইকেলে ঘুরে দেখছেন এ নগরপিতা।
নগর ভবন সূত্রে জানা গেছে, ২০টি বাস যাত্রীদের ফ্রি সার্ভিসে সেবা প্রদানের জন্য যুক্ত করেছেন মেয়র। এ ছাড়া মেয়রের নিয়োগকৃত কর্মীরা লঞ্চ থেকে যাত্রীরা নৌ-টার্মিনালে নামার পর ফ্রি বাস সার্ভিসের প্রচারনা করছেন। এ ছাড়া মেয়র নিজেই নৌ-বন্দরে দাঁড়িয়ে থেকে যাত্রীদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহর এমন অবিস্মরণীয় সেবা পেয়ে খুশি বরিশালসহ গোটা দক্ষিণাঞ্চলের ঘরমুখী মানুষ। মেয়রের এমন উদ্যোগকে সাধুবাদ জানিয়েছেন ঘরমুখোরা।
ঢাকা থেকে লঞ্চযোগে বরিশালে আসা তানভির আহম্মেদ বলেন, পূর্বের ঈদে বরিশাল নদী বন্দরে নেমে আলফা, অটো বা সিএনজিতে করে রূপাতলী যেতে কমপক্ষে জনপ্রতি ১০০ থেকে ২০০ টাকা লাগতো। তার ওপর গভীর রাতে যাতায়াতে নানান আতঙ্ক থাকতো। এবার সিটি মেয়রের মহতি উদ্যোগে ফ্রি বাস সার্ভিসের কারণে কোন ভাড়াই গুণতে হয়নি। আবার পথের নিরাপত্তা নিয়েও কোনো দুশ্চিন্তা নেই। তার ওপর মেয়র নিজেই নৌ-বন্দরে দাঁড়িয়ে যাত্রীদের অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন। এমন যোগ্য মেয়র বাংলাদেশের কোন নগরীতে আছে বলে আমার জানা নেই।
জেসিকা আহম্মেদ জুঁই নামের আরেক যাত্রী বলেন, প্রথমবারের মতো বরিশাল সিটি কর্পোরেশন এমন একটি উদ্যোগ নিয়েছে। ফলে ফ্রি বাস সার্ভিসের কারণে যাত্রীরা অন্য পরিবহন চালকদের জিম্মিদশা থেকে মুক্তি পেয়েছে। তিনি বলেন, এমন নগর পিতাই মানুষ চায়।
সরেজমিনে শুক্রবার দিবাগত রাত রাত ১২টা দিকে দেখা গেছে, লঞ্চঘাট এলাকায় নিজে মোটরসাইকেল চালিয়ে এসে যাত্রীদের সাথে কথা বলছেন সিটি মেয়র সাদিক আব্দুল্লাহ। কুশল বিনিময়, যাত্রাপথে কোন বিড়ম্বনা আছে কিনা, হয়রানির শিকার হচ্ছেন কিনা-এমনসব খোঁজখবর নিচ্ছেন। শুধু লঞ্চঘাট এলাকায়ই নয়; কেন্দ্রীয় বাস টার্মিনাল নথুল্লাবাদ ও রূপাতলীতেও গিয়ে যাত্রীদের সাথে কথা বলেন তিনি। অপরদিকে আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে রাখতে কোতোয়ালি মডেল থানার চৌকস ওসি মোঃ নুরুল ইসলাম পিপিএম’র নেতৃত্বে একদল পুলিশ নগরীর গুরুত্বপূর্ণ এলাকায় অবস্থান ও টহল কার্যক্রম অব্যাহত রেখেছেন।
উল্লেখ্য, ঈদের স্পেশাল সার্ভিসের কারণে সকাল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত ২৬টি বিলাস বহুল লঞ্চ ঢাকা থেকে বরিশাল নৌ-বন্দর পর্যন্ত যাত্রী পরিবহন করছে। যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে ওইসব লঞ্চগুলো আবার ছুটে চলছে ঢাকার সদরঘাটের উদ্দেশ্যে। ফলে গত বৃহস্পতিবার থেকে ২৪ ঘন্টাই দক্ষিণাঞ্চলের যাত্রীদের আনাগোনায় মুখর হয়ে উঠেছে বরিশাল নৌ-বন্দর।