কোরবানীর ঈদের আর মাত্র কয়েকদিন বাকি। আর এ ঈদকে সামনে রেখে ঝিনাইদহ কালীগঞ্জ উপজেলায় মোট ৩টি ছোট-বড় গরুর হাট বসেছে। কিন্তু শেষ বাজারে এসে গরুর দাম পাচ্ছে না গরু বিক্রেতা ও ব্যাপারীরা। হাটে গরু বেশি, ক্রেতা কম অবস্থা বিরাজ করেছে। ঝিনাইদহের মধ্যে কালীগঞ্জ উপজেলার গাজীর বাজারে প্রতি সোমবারে গরুর বড় হাট বসে। এখানে যশোর, মাগুরা ও ঝিনাইদহ জেলার ১৮ উপজেলার কয়েক শত গ্রামের গরু উঠে।
সরেজমিনে হাটে দেখা যায়, আনুমানিক ৩ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৪ হাজার ছোট-বড় দেশীয় গরু উঠেছে। অনেকে গরু ধরে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু বিক্রি নেই। গত কয়েক হাটের চেয়ে সোমবারের হাটে গরু প্রতি দাম কমেছে ১০ থেকে ২০ হাজার টাকা। যার কারণে মুখে হাসি নেই গরু বিক্রেতা ও ব্যাপারীদের।
ঝিনাইদহের কোটচাঁদপুর উপজেলার ফাজিলপুর গ্রামের গরু বিক্রেতা লুৎফর রহমান জানান, তিনি হাটে বিক্রি করার জন্য ৪ টি গরু নিয়ে আসেন। একটি গরু মাত্র ৬০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন। বাকি তিনটি দাম কম হওয়ায় তা বিক্রি করতে পারেননি। তিনি আরো জানান, বিক্রি হওয়া গরুটি ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকা দাম হওয়ার কথা ছিল।
মাগুরা জেলার শাখিলা উপজেলার শতখালী গ্রামের গরু ব্যাপারী সাহেব আলী জানান, তিনি ৪৮ বছর ধরে গরুর ব্যবসার সাথে জড়িত। গাজীর বাজারের সোমবারের হাটে আনুমানিক ৩ কোটি টাকা মূল্যের প্রায় ৪ হাজার গরু উঠেছে। কিন্তু ক্রেতা কম। শেষ বাজারে এসে গরুর দামও ভাল পাওয়া যাচ্ছে না। তিনি আরো বলেন, এবার অনেকে বেশি বেশি করে গরু পোষ করেছে। যার কারণে হাটে অনেক বেশি গরু উঠেছে। তাছাড়া ২০ জেলারও বেশি এলাকায় বন্যা হয়েছে। এসব কারণে গরু দাম পাওয়া যাচ্ছে না বলেও উল্লেখ করেন। তিনি হাটে ৩টি গরু এনেছিলেন। ৫৩ হাজার টাকায় মাত্র ১টি গরু বিক্রি করতে পেরেছেন। বাকি দুইটি গরু বিক্রি করতে পারেননি। তিনি আরো বলেন, হাটে গরু বেশি কিন্তু ক্রেতা কম।
মাগুরার শাখিলা উপজেলার তালখড়ি থেকে আসা গরু বিক্রেতা আবদুর রহিম জানান, তিনি গ্রাম থেকে ৮৭ হাজার টাকা দিয়ে একটি গরু কিনেন। হাটে এসে তাকে ৮৫ হাজার টাকায় সেই গরুটি বিক্রি করেছেন। এতে তার ২ হাজারসহ আনুসঙ্গিক খরচ-খরচাধরে প্রায় ৫/৬ হাজার টাকা লোকসান গুনতে হয়েছে।
যশোরের বাঘারপাড়া উপজেলার গরীবপুর গ্রামের গরু ব্যবসায়ী আবদুর রাজ্জাক জানান, তিনি সাড়ে ৪মণ ওজনের একটি গরু ৮০ হাজার টাকা বিক্রি করেছেন। যেটার দাম হওয়ার কথা ছিল ৯০ হাজারের উপরে।
মাগুরা জেলার সলুয়া গ্রামের শফিরুল ইসলাম নামের এক গরু ব্যাপারী জানান, হাটে এবার বাইরের ব্যাপারি কম তাই গরু বিক্রিও কম। তিনি পৌনে ৪ মন ওজনের একটি গরু ৭৬ হাজার টাকা দিয়ে কিনে ওই দাম্ইে বিক্রি করেছেন। এতে তার কোন লাভ হয়নি। গাজীর বাজার হাটের ইজারাদার সাগর বিশ্বাস বলেন, আমাদের হাটটি কয়েকটি জেলার মধ্যে উন্নতম। প্রতি বছরই এই হাটে হাজার হাজার গরু উঠে। বেচা-কেনাও ভাল হয়। কিন্তু অন্যান্য বছরের তুলনায় এবার গরু বেচা-কেনার অবস্থা খুব এটা সুবিধাজনক হয়নি। হাটে অনেক গরু উঠেছে কিন্তু বিক্রি কম হয়েছে।