পাবনার চাটমোহর উপজেলার ছাইকোলা ইউনিয়নের কাটেঙ্গা দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নির্বাচিত ম্যানেজিং কমিটি বাতিল করে এডহক কমিটি গঠণের অপতৎপরতা চালানো হচ্ছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ব্যাপারে বর্তমান কমিটির নির্বাচিত সভাপতি কাটেঙ্গা গ্রামের ময়ছার আলী সরকারের ছেলে মোঃ রঞ্জু আহম্মেদসহ ম্যানেজিং কমিটির নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যবৃন্দ আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। আদালত বিবাদীগণের উপর কেন অস্থায়ী নিষেধাজ্ঞার আদেশ প্রদান করবেন না,তা জানার জন্য কারণ দর্শানো নির্দেশ জারি করেছেন। মামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা,পাবনা জেলা শিক্ষা অফিসার,উপজেলা শিক্ষা অফিসার,সংশ্লিষ্ট ক্লাস্টারের সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ও স্কুলের প্রধান শিক্ষককে বিবাদী করা হয়েছে।
অভিযোগে জানা গেছে,কাটেঙ্গা দক্ষিণপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির অভিভাবক সদস্যসহ বিভিন্ন ক্যাটাগরিতে সদস্য নির্বাচনের জন্য নির্বাচনী তফশীল অনুযায়ী ২৩/০৯/২০১৮ ইং তারিখে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এরপর ২৯/০১/২০১৯ ইং তারিখে বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সভাপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। নির্বাচনে মোঃ রঞ্জু আহমেদ ৯ ভোট ও তার প্রতিদ্বন্দ্বি শহিদুল ইসলাম ২ ভোট পান। ১১/০২/২০১৯ ইং তারিখে ম্যানেজিং কমিটির প্রথম সভায় মোঃ আঃ সালাম প্রাং সহ-সভাপতি নির্বাচিত হন। স্কুলের প্রধান শিক্ষিকা ২১/২/১৯ ইং তারিখে কমিটি অনুমোদনের জন্য উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার দপ্তরে দাখিল করেন। গত ৯ মাস যাবত এই নির্বাচিত কমিটি দায়িত্ব পালন করছেন। বাদী মোঃ রঞ্জু আহমেদসহ অন্য সদস্যরা অভিযোগ করেন পরাজিত সভাপতি প্রার্থী শহিদুল ইসলাম বর্তমান কমিটি বাতিল করার জন্য বিভিন্ন স্থানে অভিযোগ দাখিল করেন। এ অবস্থায় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম নিজেই এই অভিযোগের তদন্ত পূর্বক বর্তমান কমিটি বাতিল করে এডহক কমিটি গঠণের নির্দেশ দেন। শুধু তাই নয় উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা প্রধান শিক্ষিকাকে নির্দেশ দিয়ে উচ্চবিদ্যালয় প্রতিনিধি ও বিদ্যোৎসাহী প্রতিনিধি মনোনীত করেন। স্কুলের নির্বাচিত সভাপতি আরো অভিযোগ করেন বর্তমান কমিটি ভেঙে এডহক কমিটি গঠণ করা হলে এলাকায় বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে এবং আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি হতে পারে।
এ বিষয়ে নির্বাচন পরিচালনার নিয়োগপ্রাপ্ত রিটানিং কর্মকর্তা ও উপজেলা সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ কামরুল ইসলাম বলেন,নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন হয়েছে। নির্বাচিত কমিটি অবশ্যই বৈধ। অভিভাবক সদস্য নির্বাচন কিংবা সভাপতি নির্বাচনকালে কেউ কোন প্রকার অভিযোগ করেননি। এখন অভিযোগ করা হয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ সিদ্ধান্ত নেবে।
উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ আশরাফুল ইসলাম বলেন,কমিটি গঠণের পর তা অনুমোদনের জন্য আমার কাছে জমা দেয়নি। তাছাড়া অভিযোগ পাওয়ার পর তদন্ত করেছি। বিদ্যোৎসাহী ও উচ্চবিদ্যালয় প্রতিনিধি মনোনয়নে অনিয়ম হয়েছে। সঠিক হয়নি। তাই সমস্যা সমাধানে এডহক কমিটি করা হয়েছে। পরিপত্র অনুযায়ী কমিটি অনুমোদন না হলে ৩০ দিন পর তা এমনিতেই অনুমোদিত হয়ে যাবে-এমন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন,আমার কাছে কোন কমিটিই জমা হয়নি। সেখানে ৩০ দিন পর কীভাবে অটো অনুমোদন হবে কমিটি। তিনি বলেন আমরা আদালতের নোটিশ পেয়েছি,জবাব দেবো। তবে অনিয়ম হয়েছে,তা তদন্তে পাওয়া গেছে। ফলে এডহক কমিটিই হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সরকার অসীম কুমার বলেন,কীভাবে সভাপতি নির্বাচিত হয়েছে,কোন ত্রুটি আছে কিনা-তা জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা আমাকে বলেছেন,কোন ত্রুটি নেই আমাদের। আমি সেভাবেই শিক্ষা অফিসারকে আদালতে জবাব দিতে বলেছি। কোন ত্রুটি থাকলে অবশ্যই সমাধান হবে।