এক সময়ে বিশ্ববিদ্যালয় দাপিয়ে বেড়ানো ছাত্রীটি এখন অসহায়। পাত্রস্থ করার নামে প্রতিবেশি চাচা লুটে নিয়েছে তার সর্বস্ব। প্রতারনা করে বিয়ের নামে সেই চাচা হাতিয়ে নিয়েছেন রোজগার ও ঋণের ৮ লাখ টাকা। এ অবস্থায় রোগে-শোকে কাতর হয়ে রংপুরের পীরগাছা উপজেলার মকরমপুর গ্রামের বাড়িতে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছেন মার্স্টাস পাস হেলেনা বেগম। সহযোগিতা চান আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নারী পরিষদ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর।
গতকাল সোমবার সরেজমিনে মকরমপুর গ্রামে হেলেনা বেগমের বাড়িতে গেলে ছুটে আসেন গ্রামবাসী। এ সময় হেলেনা অসুস্থ অবস্থায় বাড়ির উঠানে গাছ তলায় শুয়ে জানান, ২০১২ সালে ঢাকা ইডেন কলেজে ভর্তি হয়ে পড়া-লেখার পাশাপাশি চাকুরীর করতেন উদরাময় গবেষনা কেন্দ্রে স্বাস্থ্য প্রকল্পে। সুখেই চলছিল তাদের সংসার। ইতোমধ্যে ২০১৪ সালে পিতার মৃত্যুর পর সংসারের হাল ধরেন হেলেনা বেগম। বাড়িতে থাকা দুই বোনকে বিয়ে দেন এবং সংসার চালাতে থাকেন। ২০১৬ সালে মার্স্টাস পাশ করলে প্রতিবেশি চাচা ২ সন্তানের জনক তারা মিয়া (কাঠ মিস্ত্রী) তাকে জসিম নামের একজনের সাথে বিয়ের প্রস্তাব দেন এবং নিজেই জসিম সেজে প্রতারনা করে মোবাইলে কথা চালিয়ে যেতে থাকেন। এরই মধ্যেই চাচা তারা মিয়া ও জসিম উদ্দিন প্রতারনা করে বিয়ের নামে হেলেনাকে ফাঁদে ফেলে তার সর্বস্ব লুটে নেন অশ্লীল দৃশ্য ধারন করে এ ঘটনা কাউকে না বলার জন্য শাসান। এতে হেলেনা বেগম নমনীয় হয়ে পড়লে চাচা তারা মিয়া পাত্র জসিমের চাকুরী জন্য আগাম যৌতুক হিসেবে তার রোজগার ও গ্রামের বিভিন্ন এনজিও থেকে ঋণের ৮ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন। ওই প্রতারকদ¦য় বিয়ের নামে তালবাহানা করে হেলেনা বেগমকে কয়েক বার হত্যার চেষ্টা চালায়। এতে করে হেলেনা বেগম সম্ভমহানী, ঋণের ৮ লাখ টাকা আত্মসাতের ঘটনায় রোগে-শোকে কাতর হয়ে ঢাকায় অসুস্থ হয়ে পড়েন। পরে তার বোন ও প্রতিবেশিরা বিষয়টি জানতে পেরে ঢাকা থেকে হেলেনা বেগমকে গ্রামের বাড়িতে নিয়ে এসে গত ১ আগস্ট রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। হাসপাতালে কয়েকদিন চিকিৎসার পর অর্থ সংকটে চিকিৎসা খরচ না থাকায় গ্রামের বাড়িতে ফিরে আসেন হেলেনা বেগম। বর্তমানে সে খাদ্য ও চিকিৎসার অভাবে বাড়িতে শুয়ে মৃত্যুর প্রহর গুনছে।
হেলেনার ফুফা ফেরদৌস আলম, প্রতিবেশি চাঁন মিয়া, হাবিবুর রহমান, ইতি বেগম জানান, লম্পট তারা মিয়া কর্তৃক সম্ভমহানী ও অর্থ হারানোর ঘটনায় ভেঙ্গে পড়েছে হেলেনা বেগম। তার চিকিৎসার ব্যয় ভার চালানো সম্ভব হচ্ছে না। তারা মিয়া নানা ভাবে হেলেনা ও তার পরিবারকে হুমকি-ধামকি দিচ্ছে। অসহায় হেলেনা বেগম আইন প্রয়োগকারী সংস্থা, নারী পরিষদ ও মানবাধিকার সংগঠনগুলোর হস্তক্ষেপ কামনা করছেন।