হাজারো মানুষের ভিড় ঠেলে হাটে গিয়ে কোরবানির জন্য গরু কেনা ঝামেলার। এই ঝামেলা এড়াতে বগুড়ার নন্দীগ্রামে স্থানীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি খামারগুলোর বাড়ি থেকে সরাসরি গরু কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন লোকজন।
ঈদুল আযহা সামনে রেখে গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত কাটাচ্ছেন উপজেলার খামারিরা। তাঁরা বলছেন, ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হচ্ছে এসব গরু।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর জানান, এই উপজেলায় ছোট-বড় এক হাজার গরুর খামার রয়েছে। ঈদুল আযহা সামনে রেখে এ বছর ৪ হাজার ৫০০ টি গরু মোটাতাজা করা হচ্ছে। ক্ষতিকর ওষুধ ব্যবহার ছাড়াই দেশীয় খাবার খাইয়ে মোটাতাজা করা হচ্ছে এসব গরু। এসব অধিকাংশ গরু বাড়ি থেকেই বিক্রি হয়ে যায়।
কয়েকজন খামারির সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ঈদুল আযহাকে কেন্দ্র করে প্রতিবছরের মতো এবারও গরু মোটাতাজাকরণে ব্যস্ত সময় পার করছেন উপজেলার খামারিরা। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে দেশের বিভিন্ন জেলায় সরবরাহ করা হবে দেশীয় প্রদ্ধতিতে পালন করা এসব গরু। দেশীয় খাবার খাওয়ানো ও ক্ষতিকর ওষুধ প্রয়োগ না করায় এসব গরুর চাহিদা থাকে বেশি। এতে লাভবান হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী তাঁরা। ভারত ও মিয়ানমার থেকে অবৈধ পথে গরু আমদানি না হলে লোকসানের আশঙ্কা নেই বলে জানান তাঁরা।
পাটগাড়ী গ্রামের ইমদাদুল হোসেন বলেন, গরু পালন তার নেশা। এ বছর তিনি ১২ টি গরু পালন করেছেন। পরিবারে সবাই গরু পালনে সহায়তা করেন। তবে গরু মোটাতাজায় তারা কোনো ইনজেকশন ব্যবহার করেন না বলে দাবি করেন। তার দাবি, কৃষিকাজে তারা যে গম, খৈল ও ভূষি পান তা থেকেই গরুর খাবার যোগান দেন।
জামালপুর গ্রামের সিরাজুল ইসলাম বলেন, চার মাস আগে গরুগুলো কিনে মোটাতাজা করা হচ্ছে। সাধারণত কাঁচা ঘাস আর খড়, ভূসি ও কুঁড়া খাওয়াই। দিন দিন পশুখাদ্যের দাম বাড়ার কারণে গরু পালনে খরচ বেড়েছে। আমার এখানে সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা দামের গরু রয়েছে।
উপজেলার সিংড়াখালাস গ্রামের আবু সাঈদ বলেন, তার কোরবানি একটি ষাঁড় গরু ১ লাখ ৭০ হাজার টাকা দিয়ে বাড়িতেই বিক্রি করেছেন। ক্রেতারা বাড়িতে এসে গরু কিনছেন।
কোরবানির গরু কিনতে আসা আরিফুর রহমান জানান, গরুর হাটের ভিড় ও দালালের ঝামেলা এখানে পোহাতে হয় না। পছন্দের গরুর দরদাম ঠিক করে গেলে ঈদের আগের দিন নিয়ে যাওয়া যায়।
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. শফিউল আলম বলেন, এই সময়ে গরুবে ভাল খাবার দেওয়া হয়। পাশাপাশি কৃমি মুক্ত রাখা হয়। খাদ্য রুপান্তর হার বাড়ানোর জন্য কিছু ভিটামিন ব্যবহার করা হয়। যা মোটাতাজাকরণের স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। তাই অনেকে বাড়ি থেকেই গরু কিনতে আগ্রহী হচ্ছেন।