রাজশাহীর তানোরে মাদকের টাকা জোগাড় করতে ডাক্তার সেজে প্রতারনা করছেন এক মাদকাশক্ত যুবক। ওই মাদকাশক্ত যুবকের দোকানে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও আইন প্রয়োগকারী সংস্থার জরুরী হস্থক্ষেপ কামনা করছেন সচেতন মহলসহ এলাকাবাসী। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ ও এলাকাবাসী সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার মিরাপুর কড়ইতলা গ্রামের আজাহার আলী মাষ্টারের পুত্র ফেন্সিডিলের নেশায় আশক্ত নাদিমুল ইসলাম নাদিম তানোর-চৌবাড়িয়া সড়কের মিরাপুর কড়ইতলা মোড়ের একটি দোকান ভাড়া নিয়ে কিছু ঔষুধের সেমপুল সাজিয়ে এবং অকেজ আল্ট্রাসোনোগ্রাফী মেশিন ও রক্তের গ্রুপ নির্নয় মেশিন রেখে নিজেকে ডাক্তার পরিচয় দিয়ে প্রতিদিন এলাকার সাধারন দরিন্দ্র মানুষকে চিকিৎসা সেবা দেয়ার নামে প্রতারনা করে আসছেন। সংশ্লিষ্ট সুত্র জানা গেছে, ‘বাংলাদেশ মেডিক্যাল এ- ডেন্টাল কাউন্সিল’ নামে একটি আইন অনুমোদন দিয়েছে। এই আইনে রয়েছে, এমবিবিএস ও বিডিএস পাশ করা চিকিৎসক ছাড়া অন্য কেউ নামের আগে ডাক্তার বা ডিগ্রী লিখতে পারবেন না। কিন্তু নাদিমের কোন ডাক্তারী সার্টিফিকেট বা দোকানের কোন লাইসেন্স কোনটাই নেই, সে এলাকায় ফেন্সিডিল সেবী হিসেবে পরিচিত। অভিনব ভাবে গ্রামের দরিন্দ্র রোগিদের দিনে ২টা থেকে ৪টা রোগিকে ঠকিয়ে মাদকের টাকার জোগাড় হলেই উঠে পড়েন।
(আজ) গতকাল সোমবার সরজমিনে ওই দোকানে গিয়ে দেখা যায়, ছোট্র একটি ময়লা আবড়জনায় ভরা টিনের ঘরে কিছু ঔষুধ আর তার পেছনে একটি টেবিল ও চেয়ার এবং একটি বেড আর বেডের পার্শে অকেজ কিছু যন্ত্রপাতি যা অকেজো। সেখানে ডাক্তারের জন্য অপেক্ষা করছেন তানোর উপজেলার তালন্দ ইউনিয়নের নারায়নপুর সাজ্জাদের স্ত্রী রাশেদা বেগম (৪০) আর তার পার্শে ডাক্তারের চেয়ার টেবিলে বসে এক যুবক মোবাইল মেরামত করছেন। ওই যুবক বলেন ডাক্তার সাহেব এখনো আসেননি তাই তিনি ডাক্তারের চেয়ার ও টেবিলে বসে মোবাইল মেরামত করছেন। ওই যুবক তার নাম জানাতে অস্বীকৃতি জানিয়ে বলেন, ডাক্তার না থকলে আমি এখানেই বসে থাকি, ডাক্তার মাঝে মাঝে আষেন ২ থেকে ৪টা রোগি দেখেই চলে যান। রাশেদা বেগমের কি সমস্যা জানতে চাইলে তিনি বলেন বুক ব্যাথা, হাটুর নিচে ব্যাথা। অনেক সময় মাজার নিচে বাম সাইডে ব্যাথা করে। তাই তিনি এখানে এসেছেন। কিছুক্ষন পর ডাক্তার নাম ধারী নাদিম আসেন এসেই তিনি ব্যাস্থ হয়ে উঠেন সাংবাদিকদের আপ্পায়নের জন্য। এ সময় তার কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখানে বষেই তিনি রক্ত গ্রুপ পরীক্ষা নিরিক্ষা, আল্ট্রাসনোগ্রাফী, ইসিজি পরীক্ষা ও তিনিই নিজেই ওইসব পরীক্ষা নিরিক্ষার রিপোর্ট দিয়ে রোগিদের সেবা করছেন বলে। তিনি বলেন, গ্রামে চিকিৎসা করতে কোন ডিগ্রী লাগেনা পল্লী চিকিৎসকরা ঔষুধ বিক্রির পাশাপাশি অভিজ্ঞতা থাকলেই এগুলো করা যায়। ডাক্তার নাদিম বিষয়ে এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাদিম ফেন্সিডিলের নেশায় আসক্ত আর ফেন্সীডিলের টাকা জোগাড় করতেই তিনি বেছে নিয়েছেন এই অভিনব কায়দা। স্থানীয় এলাকাবাসীসহ সচেতন মহলের অভিমত জরুরী ভিত্তিতে নাদিমের দোকানে ভ্রাম্যমান আদালত পরিচালনা করে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হোক। এ ব্যাপারে যোগাযোগ করা হলে তানোর উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা (টিএইচও) রোজিয়ারা বলেন, বিষয়টি জানা নেই, খোঁজ নিয়ে ঘটনার সত্যতা পাওয়া গেলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।