জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের মৃত্যুতে শূন্য হওয়া রংপুর-৩ (সদর) আসনের উপনির্বাচনে অংশ নিতে পারে বিএনপি। রংপুর বিভাগীয়, জেলা ও মহানগর কমিটির নীতিনির্ধারণী ফোরামের একাধিক সদস্য এমনটাই জানিয়েছেন।
তারা বলেছেন, বগুড়া-৬ আসনে উপনির্বাচনে অংশগ্রহণের ধারাবাহিকতায় এই উপনির্বাচনেও বিএনপি বা জোটের পক্ষ থেকে প্রার্থী দেয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু বিএনপি কাকে প্রার্থী করবে, এ নিয়ে চলছে নানা জল্পনা-কল্পনা।
একাদশ সংসদ নির্বাচনে রংপুর-৩ আসনে ২০ দলীয় জোটের শরিক পিপিবির চেয়ারম্যান রিটা রহমানকে ধানের শীষ প্রতীক দিয়েছিল বিএনপি। সে সময় রংপুর মহানগর ও জেলা বিএনপিসহ অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা তার বিরুদ্ধে অবস্থান নেন। পরে কেন্দ্রের নির্দেশে নেতাকর্মীরা রিটার পক্ষে মাঠে নামেন।
রিটার পক্ষে কাজ করতে গিয়ে অনেকেই নানা সমস্যায় পড়েন। নেতাকর্মী বিচ্ছিন্ন রিটা রহমান দল কিংবা নির্বাচন সম্পর্কে অভিজ্ঞ না হওয়ায় এই সমস্যার সৃষ্টি হয়। অনেকেই রিটার ওপর অভিমান করে নির্বাচনের দুই-দিন আগ থেকে নির্বাচনী মাঠ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নেন।
নেতাকর্মীদের অনেকে অভিযোগ করেন, রিটা রহমান বিগত নির্বাচনের আগে উড়ে এসে জুড়ে বসেছিল। রংপুরের রাজনীতি সম্পর্কে তার নূন্যতম ধারণাও নেই। তিনি কীভাবে নির্বাচন পরিচালনা করবেন, সে দক্ষতাও নেই। শুধু তা-ই নয়, তার কথা ও কাজের মধ্যে কোনো মিল না থাকায় নেতাকর্মীর মধ্যে ক্ষোভ রয়েছে। এবারও যদি তাকে প্রার্থী করা হয়, তার পক্ষে কেউ মাঠে নামবেন না।
এদিকে দলটির একাধিক সূত্র জানায়, এবার এ আসনের উপনির্বাচনে বিএনপি নেতাকর্মীরা তাদের দলীয় কোনো নেতাকে প্রার্থী হিসেবে চায়। সেই তালিকায় প্রথমে আলোচনায় রয়েছে বিএনপির কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল ও মহানগর বিএনপির সভাপতি মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেনের নাম।
নেতাকর্মীরা মনে করছেন, এ দুই নেতার যে কেউ প্রার্থী হলে ভালো ফল আসবে। কারণ তারা যেমন দলীয়ভাবে জনপ্রিয়, তেমনি রয়েছে পরিচিতি। বিএনপি নেতাকর্মী, সমর্থক ছাড়াও বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে রয়েছে গ্রহণযোগ্যতা।
এছাড়া আরও যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন- সাবেক সাধারণ সম্পাদক সামসুজ্জামান সামু, রংপুর জেলা যুবদল সভাপতি নাজমুল ইসলাম নাজু জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি এমদাদুল হক ভরসা।
তবে প্রার্থী হিসেবে মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন সুবিধাজনক স্থানে থাকবেন বলে অনেকেরই অভিমত। কারণ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষের মধ্যে একজন ভালো মানুষ হিসেবে তার সুনাম রয়েছে। তাই উপনির্বাচনে তাকে প্রার্থী করা হলে এবং নির্বাচন রাজনৈতিক-প্রশাসনের প্রভাবমুক্ত হলে লড়াইটা বেশ জমবে।
জানাতে চাইলে মুক্তিযোদ্ধা মোজাফফর হোসেন বলেন, রংপুর আমারই এলাকা। রংপুরের উন্নয়নে আমি দলমত নির্বিশেষে সবসময়ই কাজ করে যেতে চাই। বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণের সিদ্ধান্ত নিলে আমি নির্বাচন করতে আগ্রহী। উল্লেখ্য, এরশাদের মৃত্যুতে রংপুর সদর-৩ আসনটি মঙ্গলবার শূন্য ঘোষণা করে গেজেট প্রকাশ করেছে সংসদ সচিবালয়।