নাটোরের বড়াইগ্রামে শিহাব উদ্দিন (১১) নামে এক মাদ্রাসা ছাত্রকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করেছে অজ্ঞাত দুর্বৃত্তরা। মঙ্গলবার রাত সাড়ে আটটার দিকে বনপাড়া এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। পরে রাত ৯টার দিকে গলায় তিনটি গুরুতর রক্তাক্ত জখম অবস্থায় স্থানীয়রা তাকে বনপাড়ার একটি বেসরকারি হাসপাতালে রেখে যায়। শিহাব উপজেলার চান্দাই ইউনিয়নের রাজেন্দ্রপুর গ্রামের আনিসুর রহমানের ছেলে ও রাজাপুর হাফেজিয়া মাদ্রাসার ছাত্র।
বনপাড়ার পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতাল সুত্রে জানা যায়, তার গলার তিন স্থানে কাটার ক্ষতচিহ্ন আছে। তার মধ্যে একটি প্রায় তিন ইঞ্চি লম্বা, অপর দুইটি অপেক্ষাকৃত ছোট। হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. সিদ্দিকুর রহমান পাটোয়ারী জানান, শিশুটির গলায় তিনটি কাঁটা জখম রয়েছে। তার হাতেও কাঁটা চিহ্ন রয়েছে। ধারণা করা হচ্ছে দুর্বৃত্তরা তাকে হত্যার চেষ্টার সময় সে প্রতিহত করার জোর চেষ্টা করেছে। ভর্তির সময় শিহাব স্পষ্টভাবে কথা বলতে পারছিল না। তবে বুধবার তার শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে অষ্পষ্টভাবে কথা বলছে বলে তিনি জানান।
বুধবার দুপুরে শিহাব সাংবাদিকদের জানায় যে, সে বনপাড়া বাজারে মামার সাথে দেখা করতে এসেছিল। মামাকে না পেয়ে রাত আটটার দিকে রাজাপুর মাদ্রাসায় যাবার জন্য সিএনজিতে ওঠে। এ সময় সিএনজির ভেতরে আরও দুইজন লোক ছিলো। কিছুদূর যাবার পর পথে সিএনজিটি দাঁড় করিয়ে তারা দুজন শিহাবকে গলা কেটে হত্যার চেষ্টা করে। এ সময় সে প্রাণপনে চেষ্টা করে সেখান থেকে পালিয়ে এসে স্থানীয়দের সহায়তায় বনপাড়া পাটোয়ারী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি হয়। তবে কে কি কারণে তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে এ ব্যাপারে সে কিছু জানাতে পারেনি।
শিশুটির বাবা আনিসুর রহমান জানান, তাঁর ছেলে মাদ্রাসায় থেকে পড়াশোনা করে। কে বা কারা কেন তার ছেলেকে হত্যার চেষ্টা করেছে সে ব্যাপারে তিনি কিছুই জানেন না। তিনি ছেলের হামলাকারীদের শনাক্ত করে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। মাদ্রাসার মুহতামিম আবদুল লতিফ জানান, শিহাব উদ্দিন মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে মাদ্রাসা থেকে পালিয়ে যায়। বিষয়টি তখন তার অভিভাবকদের জানানো হয়। রাতে পুলিশের মাধ্যমে খবর তিনি হাসপাতালে আসেন।
এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (বড়াইগ্রাম সার্কেল) হারুন অর রশিদ জানান, বিষয়টি নিয়ে তদন্ত চলছে। তদন্তে এ ঘটনার প্রকৃত রহস্য উদঘাটন হবে। পুলিশ ঘটনাটি গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে।
খবর পেয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আনোয়ার পারভেজ মঙ্গলবার রাতেই হাসপাতালে চিকিৎসাধীন শিশুটিকে দেখতে যান। তিনি সাংবাদিকদের জানান, ঘটনাটি রহস্যজনক। পুলিশকে গুরুত্ব দিয়ে ঘটনাটি তদন্ত করতে বলা হয়েছে।