বাংলাদেশের নাগরিকত্ব পাওয়া লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট বাধ্যর্কজনিত কারণে হঠাত করে অসুস্থ হয়ে পরেছে। খবর পেয়ে লুসি হল্টের শারিরিক অবস্থার খোঁজখবর নিতে তার সাথে সাক্ষাত করেছেন বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার রাম চন্দ্র দাস এবং জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান।
সোমবার সন্ধ্যায় বরিশাল নগরীর অক্সফোর্ড মিশন চার্চে লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্টের সাথে সাক্ষাতের সময় বরিশালের সিভিল সার্জন ডাঃ মনোয়ার হোসেন, বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ডাঃ মোঃ বাকির হোসেন, সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক আল মামুন তালুকদার উপস্থিত ছিলেন। তারা লুসি হল্টের শারিরিক অসুস্থতার বিষয়ে খোঁজ খবর নেন। কর্মকর্তারা লুসি হল্টের চিকিৎসার জন্য তাকে অর্থ সহায়তা করেছেন। পাশাপাশি প্রাথমিক মেডিকেল চেকআপ শেষে বিভাগীয় কমিশনার অক্সফোর্ড মিশন চার্চের ফাদার জনকে লুসি হল্টের সার্বক্ষনিক দেখশোনা জন্য একজন সেবিকা নিয়োগ দেয়ার অনুরোধ করেন। প্রয়োজনে প্রশাসনের সাথে যোগাযোগ করার জন্যও বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ৫৭ বছর ধরে এদেশে মানুষের সেবা করেছেন বিট্রিশ নাগরিক লুসি হল্ট। মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জীবনের মায়া তুচ্ছ করে যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধাদের চিকিৎসা সেবা করেছেন মানবদরদি এই ব্রিটিশ নাগরিক। বর্তমানে বিনা পারিশ্রমিকে বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনের প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তিনি শিশুদের ইংরেজি পড়ান। তিনি শিশুদের জন্য তহবিল সংগ্রহেরও কাজ করছেন। দীর্ঘসময় ঘুরে ফিরে তিনি কাজ করেছেন যশোর, খুলনা, নওগাঁ, ঢাকা, গোপালগঞ্জ ও বরিশালে। জীবনের শেষ সময়ে বরিশালের মাটিতেই তিনি সমাহিত হতে চান। এজন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার আন্তরিকতায় লুসি হল্টকে বাংলাদেশে দৈত্ত নাগরিকত্ব দেয়া হয়েছে।
৮৭ বছর বয়সী লুসি হেলেন ফ্রান্সিস হল্ট ১৯৩০ সালের ১৬ ডিসেম্বর যুক্তরাজ্যের সেন্ট হ্যালেন্সে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা জন হল্ট ও মা ফ্রান্সিস হল্ট। দুই বোনের মধ্যে ছোট লুসি। তার বড় বোন রুত অ্যান রেভা ফেলটন স্বামী ও তিন ছেলে নিয়ে যুক্তরাজ্যে বসবাস করেন। লুসি ১৯৬০ সালে প্রথম বাংলাদেশে আসেন। যোগ দেন বরিশাল অক্সফোর্ড মিশনে। এখানে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিশুদের পড়াতেন। এরপর ২০০৪ সালে অবসর নেওয়ার পর তিনি আর দেশে ফিরে যাননি।