ভারী বর্ষন ও উজান থেকে ধেয়ে আসা পাহাড়ী ঢলে গত কয়েক দিনের বন্যায় কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার বন্যা পরিস্থিতি আরও অবনতি হয়েছে। মিয়া পাড়া টু ধুলাউড়ির সংযোগ সড়ক ভেঙ্গে নতুন করে প্লাবিত হয়েছে আরও ১০টি গ্রাম।।উপজেলার ৩টি ইউনিয়নের ১০০ গ্রামের ৮০ হাজার মানুষ পানি বন্দি হয়ে পড়েছে। বন্যায় সকল বীজতলা,শাকসবজির বাগান,মাছের পুকুর, কাচাঁ রাস্তা বিধ্বস্ত হয়ে পড়েছে। বন্যায় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পানি উঠায় রাজিবপুর,কোদাল কাটি ও মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষনা করা হয়েছে। বন্যার্তদের মাঝে বিশুদ্ধ পানি ও খাবারের সংকট দেখা দিয়েছে।এখনও পর্যন্ত বন্যা কবলিত মানুষের নিকট ত্রান পৌছেঁনি বলে অভিযোগ করেছেন বন্যার্তরা। গতকাল পর্যন্ত উপজেলার ৩ ইউনিয়নের ১৮ মেট্রিক টন জিয়ারের চাল,৫০ হাজার টাকা ও ৮০ বান্ডেল ঢেউটিন বরাদ্ধ পেয়েছেন বলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো: মেহেদী হাসান প্রতিনিধিকে জানিয়েছেন। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো: আজিজুর রহমান জানান,সোমবার বন্যার্তদের মাঝে ১শত শুকনা খাবারের প্যাকেট বিতরণ করা হয়েছে। যা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। এদিকে বন্যার্তদের মাঝে ত্রাণ দিতে না পেয়ে সকল ইউপি চেয়ারম্যান সাংবাদিক সম্মেলন করার সিদ্ধান্ত নেয়।
ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যদের মারফত জানা গেছে,নদী বিচ্ছিন্ন কোদাল কাটি ইউনিয়নের উত্তর কোদাল কাটি,পাইকানটারী পাড়া,সাজাই,চর সাজাই,পাখিউড়া,কোদালকাটি,কারিগড় পাড়া ,শংকর মাধবপুর ও তেরো রশি পাড়ার সব বাড়িতেই পানি উঠেছে। নদী ভাঙ্গনের ফলে ৭০টি বাড়ি অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
অপর দিকে মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের নাওশালা,চড়ইহাটি,বড়বেড় চর, নয়াচর,ফকির পাড়া,মাষ্টার পাড়া,চরনেওয়াজি,হাজিপাড়া,নয়াচর বাজার পাড়া, বল্লবপাড়া ও ভেলামারী গ্রামের সকল বাড়িতে পানি উঠেছে। ইউপি সদস্য সাইফুল ইসলাম জানান,বন্যার কারণে তার এলাকার সব কটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। মোহনগঞ্জ ডাংধরা প্রধান রাস্তা ছাড়া সকল রাস্তা ঘাট পানির নিচে তলিয়ে গেছে। ইউপি চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন জানান,তার ইউনিয়নে প্রায় ১০০টি বাড়ি নদী ভাঙ্গার কারণে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।
রাজিবপুর সদর ইউনিয়নের ইউপি চেয়ারম্যান কামরুল আলম বাদল জানান,তার ইউনিয়নের মিয়া পাড়া ও ধুরাউড়ি সংযোগ সড়কটি ভেঙ্গে যাওয়ায় লমাবা পাড়া,গড়াইমারী,কড়াইডাঙ্গী পাড়া,জালচিড়া পাড়া নতুন করে পানি বন্দি হয়ে পড়ে আরও প্রায় ৫ হাজার মানুষ। এ ছাড়া বদরপুর, কেচোঁমারীর চর,টাঙ্গালিয়া পাড়া, মদনের চর,মুন্সিপাড়া,মেম্বরপাড়া,আজগর দেওয়ানি পাড়া,করাতি পাড়া,বালিয়ামারী আদর্শ গ্রাম,ব্যাপারি পাড়া,জালচিড়া পাড়া,মিয়াপাড়া ও বাউলপাড়া গ্রামের মানুষ পানি বন্দি জীবনযাপন করছে। রাজিবপুর উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান আকবর হোসেন হিরো গতকাল রাজিবপুর উপজেলার কোদাল কাটি ও মোহনগঞ্জ ইউনিয়নের বন্যার্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। তিনি রাজিবপুর উপজেলার জন্য সরকারের পাশাপশি এনজিও গুলোকে এগিয়ে আসার আহবান জানিয়েছেন।