চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে পাওনা টাকার জেরে শফিকুলকে পিটিয়ে হত্যা করা হলেও মামলাটি রহস্যজনক কারণে নাচোল থানায় মামলা রেকর্ড না হওয়ায় মৃতের পিতা গত ২ মে/২০১৯ চাঁপাইনবাবগঞ্জ আমলী আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন। এরই প্রেক্ষিতে, নাচোল থানাপুলিশ বাদীর অভিযোগটি রেকর্ড পূর্বক আদালতে দাখিল করেছেন বলে ওসি মিন্টু রহমান জানিয়েছেন। কিন্তু মৃত শফিকুলের ময়না তদন্ত রিপোর্ট নিয়ে শুরু হয়েছে ধু¤্রজাল! নাচোল থানাপুলিশ বরাবরই দাবি করে আসছে ময়না তদন্ত রিপোর্টে “স্বাভাবিক মৃত্য” লিখা আছে। এদিকে একটি বেসরকারী টেলিভিশন চ্যানেলকে জেলা সিভিল সার্জন জানিয়েছিলেন পোষ্টমর্টেম রিপোর্টে “আঘাত জনিত কারণে নাড়ি ফুটা হয়ে পচন ধরে মৃত্যু হয়”। নিহত শফিকুলের মৃত্যু রহস্য নিয়ে শুরু হয়েছে ধু¤্রজাল! বাদী ইয়ার বক্স আশঙ্কা করছেন আদৌ তার ছেলের হত্যার সুষ্ঠু বিচার পাবেন কিনা ?
অপরদিকে, টেলিভিশনে হত্যার বিষয়ে প্রতিবেদন প্রচার হওয়ার পর থেকে আসামিরা বাদী ও তার পরিবারের সদস্যদের বিভিন্ন হুমকি ধামকি দিয়ে আসছে বলে বাদী ইয়ার বক্স দাবি করেছেন। ঘটনার বিবরণে জানা গেছে, নিহত শফিকুলের পিতা ইয়ার বক্স, স্ত্রী সুলতানা বেগম, ছেলে সোহেল রানা ও একমাত্র মেয়ে সোনিয়া খাতুন জানান, নিহত শফিকুলের ছেলে সোহেল রানার বউ তালাকের ব্যাপারে চাচাতো খালা মিনারা খাতুন মিনারা’র নিকট ১১হাজার টাকা ধার নিয়েছিল শফিকুল। কিন্তু মিনারার ভাই নাচোল উপজেলার পীরপুর গ্রামের অহিরুদ্দীনের ছেলে শরিফুল ধারের ১১হাজার টাকা চাইলে শফিকুল তাকে ওই টাকা দিতে অস্বীকার করে। গত ২৩/০২/২০১৯ ইং তারিখ কৌশলে শফিকুলকে নিয়ামতপুর যাবার কথা বলে মোটর সাইকেল নিয়ে আসতে বলে মামা শরিফুল। মামার কথামতো মোটর সাইকেল নিয়ে পীরপুর উচ্চবিদ্যালয় মাঠে উপস্থিত হলে মামা শরিফুল ইসলাম ভুলু ও তার দলবল ওই মুহুর্তে পাওনা টাকা চাওয়ার একপর্যায়ে বেধড়ক পিটিয়ে মোটর সাইকেলটি কেড়ে নেয়। আহত শফিকুল পীরপুর গ্রামের মধ্যপাড়ায় মামা শরিফুলের বাড়িতে আবারও তার মোটর সাইকেলটি ফেরত চাইতে গেলে শরিফুল, একই গ্রামের তাইজুদ্দীনের ছেলে বেলাল ও ইতেশ ও মিনারা খাতুনের স্বামী আবদুল হামেদ একযোগে শফিকুলকে মাটিতে ফেলে পিটিয়ে গুরুতর জখম করে। খবর পেয়ে শফিকুলের স্বজনরা সঙ্গাহীন অবস্থায় তাকে উদ্ধার করে ওইদিন নাচোল উপজেলা হাসপাতালে ভর্তি করে। রোগির অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় কর্তব্যরত চিকিৎসক শফিকুলকে রামেক হাসপাতালে রেফার করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শফিকুল মারা যায়। স্বজনরা ওই রাতে নওগাঁ জেলার নিয়ামতপুর উপজেলার মিরাপাড়া গ্রামে লাশ দাফনের ব্যবস্থা করে। খবর পেয়ে নাচোল থানাপুলিশ লাশ থানায় নিয়ে আসে। পুলিশ পরদিন ২৫ ফেব্রুয়ারী নিহত শফিকুলের লাশ ময়না তদন্ত করতে পাঠালেও থানায় কোন অপমৃত্যু মামলা রেকর্ড করেনি। পরে ময়না তদন্ত শেষে ২৫ ফেব্রুয়ারী মিরাপাড়ায় শফিকলের দাফন সম্পন্ন হয়। শফিকুলের বৃদ্ধ পিতা ইয়ার বক্সের অভিযোগ, ময়না তদন্তের রিপোর্ট না আসার অজুহাতে দীর্ঘ দিনেও হত্যা মামলা গ্রহণ করেনি নাচোল থানা পুলিশ। বিচারের আশায় নিহতের পিতা ইয়ার বক্স চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা বিজ্ঞ আদালতে ২১ মে/’১৯ তারিখে একটি অভিযোগ দায়ের করেন। এ বিষয়ে নাচোল থানার ওসি(তদন্ত) মিন্টু রহমান জানান, বিজ্ঞ আদালতের নির্দেশনায় মামালা রেকর্ড পাঠানো হয়েছে।