কালীগঞ্জ দ্বিতীয় দিনে আবার ও পৌর এলাকার অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকাল থেকে বুল ড্রেজার মেশিন দিয়ে শহরের প্রায় শতাধিক অবৈধ দোকান ঘর ও পাকা স্থাপনা দখলমুক্ত করেছে। পৌর কর্তৃপক্ষের ভাষ্য,শহরকে যানজটমুক্ত করা ছাড়াও নাগরিক সেবা নিশ্চিতকরনে তারা ওই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ চালাচ্ছেন। উচ্ছেদ অভিযানকালে থানা পুলিশ, ফায়ার সার্ভিস, বিদ্যুৎ বিভাগ, গনমাধ্যমকর্মী ও শত শত পৌর উৎসুক জনতা উপস্থিত ছিলেন। শহরের থানারোড, নিমতলা বাসষ্ঠান, পুরাতন বাজার, কলেজ রোডে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ পরিচালনা করা হয়। এ উচ্ছেদের কারণে সাধারন মানুষ খুশি উল্লাস করে।
কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম আশরাফ জানান, কালীগঞ্জ একটি বানিজ্যক ও ব্যস্ততম শহর। এ শহরের অভ্যান্তরে কিছু অসাধু ব্যাক্তি সরকারী জায়গা দখল করে নানা স্থাপনা নির্মান করে বসবাস ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান করে ভাড়া দিয়ে মোটা টাকা উপার্জন করে থাকে। যে কারণে কালীগঞ্জ শহরের সড়ক গুলো সরু হয়ে যানজট হচ্ছে। এছাড়াও দখলবাজদের বেপরোয়া দখলবাজির কারণে সরকারী জায়গা হাতছাড়া হচ্ছে এ কারনেই পৌর কর্তৃপক্ষ উদ্যোগ নিয়েছে দখলী জমি পূনরুদ্ধার করে শহরকে যানজট মুক্ত করতে। ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে দ্বিতীয় দফাতে উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে আরো প্রায় শতাধিক অবৈধ স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে পৌর কর্তৃপক্ষ। বুধবার সকাল থেকে দুপুর ২ টা পর্যন্ত পৌরসভার নেতৃত্ব এ উচ্ছেদ অভিযানে শহরের থানারোড, নিমতলা বাসষ্ঠান, পুরাতন বাজার ও কলেজ রোডের অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা হয়। এ নিয়ে দু’দফাতে পৌর শহরের প্রায় দু’শতাধিক স্থাপনা গুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে।
পৌর কর্তৃপক্ষ জানায়, স্থানীয় কিছু প্রভাবশালীরা দীর্ঘদিন ধরে পৌর শহরের অভ্যান্তরে অবৈধ পাকা ঘর নির্মাণ করে ব্যবসা চালিয়ে আসছিলো। ফলে শহরের মধ্যে সব সময় যানজট লেগেই থাকতো। পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম পৌর এলাকায় যানজট নিরসনে এ উচ্ছেদ অভিযানের উদ্যোগটি গ্রহন করেন। গত দু’সপ্তাহের মধ্যে দু’দফাতে শহরের অবৈধ স্থাপনা অপসারনের ফলে সাধারন জনমনে স্বস্তি ফিরে এসেছে।
কালীগঞ্জ শহরের এক শ্রেনীর মিয়া মাতবার এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তৎকালীন নলডাঙ্গা রাজা ফনিভূষন দেবরায়ের মৃত্যুর পর রাজবাড়ীতে কর্মরত বড়বাবুখ্যত মৃত বাকের খানের নিকট থেকে দাখিলা ও পরচা মুলে সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত কিছু জমি ভূমি জরিপ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ১৯৬২ সাল এবং সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ী নির্মাণ করেছিল। অথচ ১৯২৬ সালের ভুমি জরিপে এসমস্ত স্থাপনা গুলোর সম্পত্তি ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান রক্ষার জন্য ৬২ ও ৮৭ সালের ভূমি জরিপ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তাদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছে এবং কোটকাচারী থেকে কাগজপত্র করে রাখে।
কালীগঞ্জ শহরে কতিপয় মিয়া ও মাতব্বর তাদের অবৈধ সম্পদ রক্ষার জন্য জনপ্রতিনিধিদের সাথে তালমিলিয়ে চলে। অনেকে কোটি টাকার সরকারি সম্পদ দখল করে হাকিয়েছে ৩ থেকে ৪ তলা বাড়ি ও মার্কেট। মার্কেট গুলো ভাড়া দিয়ে লক্ষ লক্ষ টাকা কামিয়ে যাচ্ছে। শহরের তারা বিবির খাল টি দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বাসা বাড়ি করে বসবাস করছে। দ্বিতীয় দিনের মত উচ্ছেদ অভিজানের কারণে শহর টি এখন অনেক টা দখল মুক্ত হল। বিশেষ করে চিত্রা নদীর দু,পাশে যে ভাবে দখল করেছে তাতে করে নদীর নব্যতা হারিয়ে গেছে। চিত্রা নদীর দু,পাশে ও অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদ করা জরুরি হয়ে দাড়িয়েছে।