গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর নির্দেশে সরকারের ভূমি মন্ত্রনালয়ের কঠোর মনোভারের কারণে দেশব্যাপি জেলা ও উপজেলা প্রশাসন, সিটি ও পৌর কর্পোরেশনের কর্তা ব্যক্তিরা অবৈধ উচ্ছেদ অভিযান চালিয়ে যাচ্ছে। অথচ কালীগঞ্জে সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রনালয়ের অধিন নিজস্ব জমিতে যুগযুগ ধরে গড়ে উঠা দোকান পাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান, এমন কি বাসা বাড়ি, সহ অন্যন্যা অবকাঠামো এবং প্রধান সড়কের ফুটপাতের দুপাশে চৌকি পেতে দেদারছে বছরের পর বছর ধরে চালিয়ে যাচ্ছে ব্যবসা বানিজ্য। এতে রাস্তা ছোট হয়ে যাওয়া যান বাহন সহ জনচলাচল দারুন ভাবে বিঘিœত হচ্ছে। ইতিমধ্যে পার্শ্ববর্তী জেলা সহ ঝিনাইদহ, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাগুরা শহর এর আওতাধীন উপজেলা শহর গুলোতে জোরেশোরে শুরু হয়েছে অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের যাবতীয় কার্যক্রম। শুধু ব্যতিক্রম দেখা যাচ্ছে ঝিনাইদহের বানিজ্যিক শহর কালীগঞ্জ পৌরসভা এলাকায়। ইতিমধ্যে সরকারী নির্দ্দেশনা বাস্তবায়ন করতে কালীগঞ্জ পৌসভার মেয়র মোঃ আশরাফুল আলম আশরাফ এবং পাকশি রেলওয়ে বিভাগের কর্মকর্তাদের নির্দ্দেশে মোবারকগঞ্জ রেলষ্টেশন কর্তৃপক্ষ দখলকৃত জমি থেকে অবৈধ স্থাপনা ও দোকান পাট গুলো নিজ খরচে ভেঙ্গে নেবার অনুরোধ জানিয়ে নোটিশ প্রদান ও মাইকিং করেছে। এছাড়াও সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠান গুলোর পক্ষ থেকে সরকারী জমি অবমুক্ত করতে সার্ভেয়ারের মাধ্যমে মাপযোগ করে লালদাগের চিহ্ন প্রদান করেছে। তদশর্ত্বেও এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত কালীগঞ্জ পৌর এলাকায় কোন অবৈধ দখলদার নিজ উদ্যোগে তাদের দোকানপাট, ব্যবসা প্রতিষ্ঠান এবং অবকাঠামো গুলো সরিয়ে নেয়নি। বরং সরকারী জমিতে গড়েতোলা দোকানপাট, বাসাবাড়ী ও ব্যবসায়ীক প্রতিষ্ঠান সমূহ রক্ষার জন্য রাতের আধাঁরে প্রভাবশালীদের বাড়ী বাড়ী গিয়ে জোরেসোরে দেনদরবার ও তদবির চালিয়ে যাচ্ছেন। নির্ভরযোগ্য সূত্র মতে, এই শহরের এক শ্রেণীর মিয়া মাতবার এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তৎকালীন নলডাঙ্গা রাজা ফনিভূষন দেবরায়ের মৃত্যুর পর রাজবাড়ীতে কর্মরত বড়বাবুখ্যত মৃত বাকের খানের নিকট থেকে দাখিলা ও পরচা মুলে সরকারী ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত কিছু জমি ভূমি জরিপ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে ১৯৬২ সাল এবং সর্বশেষ ১৯৮৭ সালে নিজেদের নামে রেকর্ড করে নিয়ে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ও বসতবাড়ী নির্মাণ করেছেন। অথচ ১৯২৬ সালের ভুমি জরিপে এসমস্ত স্থাপনা গুলোর সম্পত্তি ১ নং খাস খতিয়ানভুক্ত। প্রভাবশালী ব্যক্তিরা তাদের নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান রক্ষার জন্য ৬২ ও ৮৭ সালের ভূমি জরিপ কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে তাদের নামে রেকর্ড করে নিয়েছে এবং কোটকাচারী থেকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সংগ্রহ করে ফেলেছেন।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কালীগঞ্জ উপজেলা ভূমি অফিসে কর্মরত কতিপয় উপসহকারী ভূমি কর্মকর্তা (নায়েব) জানায়, সম্প্রতি জনবান্ধব মাননীয় প্রধান মন্ত্রীর সরকারের ভূমিমন্ত্রী ও সচিব মহোদয় দেশের সকল বিভাগীয় কমিশনার, জেলা প্রশাসক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের জোরালো ভাবে তাগিদ দিয়েছেন। ১৯২৬ সালের ভূমি জরিপের রেকর্ডধরে ১নং খাস খতিয়ান ভুক্ত সরকারী জমি থেকে সকল প্রকার অবকাঠামো অবমুক্ত করতে হবে এবং সরকারী রাস্তার দুপাশে ফুটপাত দখলমুক্ত করতে হবে। সরকারী এই নির্দ্দেশনা মোতাবেক ইতিমধ্যে বড় বড় শহরসহ অনেক জেলা, উপজেলা ও পৌর এলাকায় জোরেশোরে অবৈর্ধ স্থাপনা উচ্ছেদের কাজ পরিচালিত হচ্ছে। অথচ ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ পৌরসভার পক্ষ থেকে একাধিকবার মাইকিং করার সর্ত্বেও এখনো পর্যন্ত কেওই স্বেচ্ছায় তাদের প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেইনি। কালীগঞ্জ পৌরসভার মেয়র আশরাফুল আলম ২০ জুন বৃহস্পতিবার পর্যন্ত অবৈধ দখলদারদের সরকারী জমি থেকে নিজ খরচে অবৈধ স্থাপনা সরিয়ে নেবার জন্য সময় বেঁধে দিয়েছে। আর একারনে প্রভাবশালীরা তাদের অবৈধ সম্পাদ রক্ষায় রাতের আধারে জনপ্রতিনিধি সহ প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের বাড়ীতে গিয়ে তদবির চালিয়ে যাচ্ছে।
স্থানীয় জাতীয় সংসদ সদস্য, জেলা প্রশাসক, উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও কালীগঞ্জ পৌর মেয়র এর কাছে কালীগঞ্জ বাসির প্রাণের দাবী এই মুহুর্তে শহরের রাস্তার দুপাশের ফুটপাতের দোকার পাট এবং সরকারী জমিতে গড়েউঠা অবৈধ স্থাপনা গুলো অচিরেই প্রশাসনের সহযোগীতায় অবমুক্ত করা হোক এবং একটি পরিচ্ছন ও মডেল পৌরসভা গঠন করা হোক। যাতে এই শহরে বসবাসকারী প্রায় পঞ্চাশ হাজার জনগন এবং গ্রামগঞ্জ থেকে শহরে আসা মানুষ গুলো যানজট মুক্ত একটি শহরে নিরাপদ ও নিবিগ্নে চরা ফেরা করতে পারে। এবং পৌর কর্তৃপক্ষ শহরের গুরুত্বপূর্ণ রাস্তা গুলো আরো প্রশস্ত ও পানি নিষ্কাশনের জন্য ড্রেন নির্মাণ করতে পারে। অভিজ্ঞ মহলের প্রত্যাশা এটাই এখন সরকার ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে সময়ের দাবি।