নামে সার্কাস, কাজে চিত্রজগতের দ্বিতীয় সারির শিল্পিদের পারফর্ম। টিকিটের মুল্য নাভিশ্বাস হলেও উঠতি বয়সিদের ঢল নামছে জনবহুল গ্রাম নীলফামারীর কিশোরগঞ্জ উপজেলার উত্তর দুড়াকুটিতে। দুপুর ২টা হলে বগুড়া এলাকার ‘দি রাজমনি সার্কাসের’ কয়েকটি মাইক বেজে উঠে উচ্চশব্দে। রাত বরোটা পর্যন্ত চলে শব্দের অসহনীয় খেলা। উত্তর দুড়াকুটি গ্রামের ‘নান্নুর বাজার’ সংলগ্ন এলাকায় যখন সার্কাসের মাইক যখন বেঁজে উঠে তখন উঠতি বয়সীরাও প্রাণপন ছোঁটে। যেন হ্যামিলনের বাঁশি বাঁজছে। আকর্ষণ একটিই সেটি চিত্রজগতের দ্বিতীয় সারির নায়ক-নায়িকাদের পারফর্ম। তাদের উৎসাহ আর আমেজ দেখলে মনে হয় সাকার্সের কসরত যেন তেতো হয়ে গেছে। সুযোগটি হাতছাড়া করছে না সাকার্স পরিচালনা কমিটি। এতে তাদের ফান্ডে মিলছে কাড়ি কাড়ি টাকা। কপাল পুড়ছে গ্রামবাসীদের, কারণ তাদের অসহনীয় শব্দে রাত ১২টা পর্যন্ত নির্ঘুম কাটাতে হচ্ছে। ঈদের দিন থেকে তারা এ অবস্থার শিকার হয়ে আছে। উঠতিরা বারবার এ পারফর্ম দেখতে হাত শুন্য করে ফেলছে। এতে অনেকে বিপথগামী হচ্ছে। বাড়ছে ছিনতাই। গত ১১ জুন রাত সাড়ে ৯টায় নিতাই ইউনিয়নের জহদ্দি মামুদের ছেলে প্যাটলা মামুদ (৩০) তার বন্ধু সহ সার্কাসে যাওয়ার পথে উত্তর দুড়াকুটি গ্রামের ব্রম্যতলে ছিনতাইয়ের শিকার হয়। এতে তার ও বন্ধুর দুটি এনড্রয়েট মোবাইল, ১টি সাইকেল ও ৭ হাজার টাকা খোয়া যায়। ওই এলাকার মতিয়ার রহমান জানান, কর্তৃপক্ষ যদি সাকাসের মেয়াদ বাড়ান, তাহলে অপরাধও বাড়বে। এ ছাড়া কোমলমতি শিক্ষার্থীদের লেখাপড়ায় পড়ছে ভাটা। কেউ শব্দদুষণে মনযোগ হারাচ্ছে, কেউ ঝুকছে সার্কাসে। রাত বারোটা বাজলেই সার্কাস প্যান্ডেলের আশপাশে বসছে মাদকসেবীদের আড্ডা। হাতির চাঁদাবাজিতে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে পথচারী। ৫০ থেকে ১শ’ টাকার কম দিলে হাতি অনায়াসে বুঝে ফেলে, তাকেও ছাড়ে না সহসা। ৩৭ সদস্যের সার্কাস পরিচালনা কমিটির প্রতিনিধি সুজন জানান, আমরা তো খারাপ কিছু করছি না, দর্শকদের মনোরঞ্জন করছি। এ ব্যাপারে কিশোরগঞ্জ থানার কর্মকর্তা ইনচার্জ হারুন অর রশিদ জানান, এলাকায় অপরাধের অভিযোগ পায়নি। টিকিটের মুল্য আমার জানা নেই।