অভিভাবক শূন্য হয়ে পরেছে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। গত ২৭ মে সদ্য বিদায়ী উপাচার্যের চার বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর গত প্রায় তিন সপ্তাহ ধরে উপাচার্য শূন্য বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। এ কারণে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম গতি হারিয়েছে। আটকে গেছে বিভিন্ন অনুষদের পরীক্ষা এবং ফলাফল। ফলে সেশন জট আরো প্রকট হওয়ার আশঙ্কা করেছেন সংশ্লিস্টরা।
সূত্রমতে, ববি’র ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য, শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের মধ্যেও গাছাড়া ভাব লক্ষ্য করা গেছে। স্থবির হয়ে পরেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক এবং আর্থিক কর্মকান্ড। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষাগারের ব্যবহারিক উপকরন ক্রয় করতে না পাড়ায় এবং উন্নয়নখাতের বরাদ্দ খরচ করতে না পারায় ফেরত যাচ্ছে বিদায়ী অর্থ বছরের অর্থ। এমনকি শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বেতন ভাতাও আটকে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন সংশ্লিস্টরা।
অপরদিকে নতুন উপাচার্য হিসেবে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষকসহ তিনজনের নাম জোড়ালোভাবে উচ্চারিত হচ্ছে। তারা হলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হিসাব বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. মোঃ মিজানুর রহমান এবং ভূগোল ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের সদ্য অবসরপ্রাপ্ত অধ্যাপক ড. একিউএম মাহাবুব। অপরজনের নাম জানা যায়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্রমতে, গত ২৬ মার্চ স্বাধীনতা দিবসের অনুষ্ঠানে আমন্ত্রণ না জানানোর প্রতিবাদকারী শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকারের বাঁচ্চা’ বলে কটূক্তি করেন সদ্য সাবেক উপাচার্য প্রফেসর ড. এসএম ইমামুল হক। উপাচার্যের ওই মন্তব্য প্রত্যাহারের দাবিতে পরেরদিন ২৭ মার্চ থেকে আন্দোলন শুরু করে শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনের মুখে তৎকালীন উপাচার্য তার একক ক্ষমতা বলে ২৮ মার্চ থেকে অনির্দিষ্টকালের জন্য ক্যাম্পাস এবং আবাসিক হল বন্ধ ঘোষনা করেন। এতে শিক্ষার্থীরা আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ছাত্রাবাস ত্যাগ না করে উপাচার্যের অপসারনের এক দফা দাবীতে আন্দোলন শুরু করেন। টানা এক মাসেরও অধিক সময় ধরে শিক্ষার্থীরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জন করে আন্দোলন করেন। একপর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতি এবং কর্মকর্তা ও কর্মচারীরাও উপাচার্যের অপসারনের দাবীতে আন্দোলনে যুক্ত হলে পুরোপুরি অচল হয়ে পরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়।
পরবর্তীতে গত ২৯ এপ্রিল রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যকে ৪৬ দিনের (১১ এপ্রিল থেকে ২৬ মে) ছুটি অনুমোদন দেন। এই সময়ের জন্য উপাচার্যের দায়িত্ব দেওয়া হয় ববি’র ট্রেজারার অধ্যাপক ড. একেএম মাহবুব হাসানকে। গত ২৬ মে উপাচার্যের ৪৬ দিনের ছুটির মেয়াদ শেষ হয়। ২৭ মে ঢাকার লিয়াজো অফিসে শেষ কার্যদিবস অতিবাহিত করেন উপাচার্য ইমামুল হক। এরপর থেকেই অভিভাবক শূন্য হয়ে পরে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়। ববি’র শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীসহ সচেতন বরিশালবাসী জরুরি ভিত্তিতে বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন উপাচার্যনিয়োগ দেয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।