রাজশাহীর বাঘায় খাল খননের ভেকু সরিয়ে নিয়েছেন কর্তৃপক্ষ। গতকাল বৃস্পতিবার সকালে এ ভেকু সরিয়ে নেয়া হয়েছে।
জানা যায়, ভূমি অধিগ্রহণ ছাড়াই মোশিদপুর থেকে নওটিকা আরিফপুর পর্যন্ত ৮.২ কিলোমিটার ১ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা ব্যায়ে খাল খনন প্রকল্প অনুমোদন হয়। এ অনুমোদন প্রকল্প সম্পূর্ণটা ধানী জমি। জমির মালিকদের কিছু না জানিয়ে এবং কর্তৃপক্ষ ভূমি অধিগ্রহণ না করে প্রকল্পের অনুমোদন দেন। ফলে গত ২৪ মে থেকে খাল খনন কাজ শুরু হয়। পরে বিষয়টি জানতে পেরে ব্যক্তিমালিকানাধীন জমিতে খাল খননের অভিযোগ এনে বিএমডিএ’র প্রকৌশলীর বিরুদ্ধে উপজেলার আরিফপুর গ্রামের তমেজ উদ্দিন, ঢাকাচন্দ্রগাঁতি গ্রামের মোজাহার আলী, নওটিকা গ্রামের আবুল কাশেম ও নিশ্চিন্তপুর গ্রামের রবিউল ইসলাম আদালতে চারটি মামলা দায়ের করেন। খাল খনন শুরু করার পরের দিন ২৫ মে খাল খননের বিরুদ্ধে এলাকায় মানববন্ধন করা হয়। এ বিষয়ে মাননীয় প্রদানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বরাবর স্বারক লিপি প্রদান করেন। এ ছাড়া এ খাল খননের বিষয়ে বিভিন্ন প্রত্রিকায় ধারাবাহিকভাবে সংবাদ প্রকাশ হওয়ায় অবশেষে ভেকু সরিয়ে নিয়েছেন। তবে কার নির্দেশে এ ভেকু সরিয়ে নেয়া হয়েছে, এ বিষয়ে কেউ নিশ্চিত করতে পারেনি। তবে ঘটনাস্থলে দেখা গেছে খনন কাজের ভেকু আর নেই।
ঢাকাচন্দ্রগাঁতি গ্রামের মোজাহার আলী বলেন, এই খালের পানি দিয়ে এলাকায় সেচ দেয়ার জন্য খাল খনন করা হচ্ছে। এটা একটা অবাস্তব কথা। এ খালের ধারে মূল আবাদি জামি ছিল উপজেলার বারখাদিয়ার বিলে। এ বিলে এখন পুকুর খনন করে এমন অবস্থার সৃষ্ঠি হয়েছে, সেখানে আর কোনো আবাদি জমি নেই। সেখানকার জলাবদ্ধতা নিরসনেরও আর দরকার নেই। সেখানে সেচ দেয়ারও আর প্রয়োজন নেই। তবে খাল যে দিক দিয়ে গেছে, তার পাশে আম বাগান আর বসত বাড়ি ছাড়া অন্য আবাদি জমি নেই। একটি আজগুবি চিন্তা নিয়ে এ খাল খনন করা হচ্ছে। এখন যেখানে খাল খনন শুরু করা হয়েছে, সেখানে সব ব্যক্তিমালিকানাধীন জমি। তারা তাদের কাগজপত্র জমা দিয়ে আদালতে বিএমডিএর বিরুদ্ধে মামলা করেছেন। তাদের দাবি সরকার যদি একান্তই খাল খনন করতে চায় তাহলে যেখানে খাস জমি রয়েছে, সেখান খাল খনন করুক, কোনো অপাত্তি নেই।
এ বিষয়ে বিএমডিএ’র সহকারী প্রকৌশলী সেলিম রেজা বলেন, এলাকায় জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ খালের মাধ্যমে যাতে এলাকার পানি পদ্মা নদীতে গিয়ে পড়ে, সেই জন্য এ খাল খনন করা হচ্ছে। এলাকায় জরিপ করে প্রকল্প অনুমোদন করা হয়। প্রকল্প অনুমোদনের আগে এলাকার মানুষ জলাবদ্ধতার দুর্ভোগের কথা বলেন। ফলে প্রকল্প অনুমোদন করে কাজ শুরু করা হয়। তবে কিছু সমস্যার কারণে সাময়িকভাবে খনন কাজ বন্ধ রয়েছে। এর সমাধান হলে কাজ শুরু করা হবে।
বাঘা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শাহিন রেজা বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের প্রেক্ষিতে খাল খনন কাজ বন্ধ রয়েছে। এ কাজের সঙ্গে আমি সংশ্লিষ্ট নয়। তবে শান্তি-শৃঙ্খলা রক্ষার্থে উভয়কে ডেকে ব্যবস্থা নিব।