ঝিনাইদহ জেলায় চলতি বছর ২২ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। সেখানে রোপন অর্জিত না হবার কারণে প্রায় ২ হাজার ৪৭০ হেক্টর জমিতে পাট চাষ কম হয়েছে। মোট রোপন হয়েছে ২০ হাজার ৪২৫ হেক্টর জমিতে।
ঝিনাইদহ জেলা কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক জানান, চলতি বছর ঝিনাইদহ জেলার ৬ উপজেলায় ২২ হাজার ৮৯৫ হেক্টর জমিতে পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল।
অনুকুল আবহাওয়া এবং কৃষি অধিদপ্তর থেকে কৃষকদের পাট চাষে আগ্রহী করার জন্য সঠিক সময়ে উদ্বুদ্ধ করায় পাট চাষ অর্জিত হয়েছে। দেশি জাতের পাটের মধ্যে বিজেসি, সিভিএল-১, সিভিই-৩, বিজিআরআই-১৫ জাতের পাট চাষ এবারে বেশি হয়েছে। তোষা জাতের মধ্যে সোনার বাংলা ৯৮ ও ৯৭, তাজ মহল ৩ ও ৪, লাউ ছড়া ১ ও ২ জাতের পাট চাষ করা হয়। গত বছর পাট চাষ করে কৃষকেরা উপকৃত হওয়ায় এবারে পাট চাষে আগ্রহ বেড়েছে। বিশেষ করে রবি মৌসুমের ১৫ এপ্রিল থেকে ৩০ মে পর্যন্ত পাটের বীজ রোপন করা যায়। একারণে উঁচু জমিতে আলু, টমেটো, বেগুন, করলা, পটল ফসল কৃষকেরা ঘরে উঠানোর পর ওই জমিতে পুনরায় পাট চাষ করতে পারে। আবার জুলাই মাসের মাঝামাঝি থেকে শেষ পর্যন্ত পাট কর্তন করে পুনরায় ওই জমিতে আমন ধানের চারা রোপন করা যায়। ফলে পাট একটি অতিরিক্ত ফলন ও লাভজনক হওয়ায় পাট চাষে কৃষকদের উদ্বুদ্ধ করা হচ্ছে। পাটের চাহিদা দেশে যেমন রয়েছে তেমনি বিদেশেও রপ্তানীর চাহিদা অনেক বেড়েছে। ফলে প্রতি বছর পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধি করতে কৃষি বিভাগ কাজ করে যাচ্ছে।
ঝিনাইদহ জেলায়ও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে ২ হাজার ৪শ’ ৭০ হেক্টর জমিতে কম আবাদ করা হয়েছে। ঝিনাইদহ জেলায় পাট চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল ২২ হাজার ৮শ’ ৯৫ হেক্টর জমি। আবাদ হয়েছে ২০ হাজার ৪শ’ ২৫ হেক্টর জমিতে। কৃষকরা বলছে আবহাওয়া অনুকুলে থাকলে পাটের ফলন ভাল হবে,অতিরিক্ত বর্ষা হলে পাটের ফলন ভাল হবে না। কৃষকরা বলছে বেশি সমস্যা হচ্ছে পাট কাটার পরে জাগ দেওয়া জায়গা ও উপযোগী পানি পাওয়া যায় না। আবার পাটের দাম প্রতি বছর একরকম যায় না, কোন বছর বেশি আবার কোন বছর কম দামে পাট বিক্রি হয়। গত বছর পাটের দাম বেশি থাকার কারণে এবার কৃষকরা পাট লাগিয়েছে বেশি। মাঠ পর্যায়ের কৃষি কর্মকর্তারা এলাকার কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করার কারণে এ চাষ হয়েছে। অন্যথায় আর ও কম চাষ হত। ঝিনাইদহ জেলার ৬ টি উপজেলার মধ্যে প্রতিটি উপজেলায় আবাদ কম হয়েছে ফলে রোপন আর্জিত হয়নি।